রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার গজঘন্টা ইউনিয়নের কিসামত হাবু গ্রামে পুরোনো রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে ৯ পরিবারকে বিপাকে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই অভিযোগ এলাকার এফতারুল হক নেতৃত্বদলের বিরুদ্ধে।সম্প্রতি ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এই চিত্র দেখাগেছে। ঘটনায় গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) কার্যালয়ে এফতারুল হকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে।অভিযোগ সুত্র জানায়,উপজেলার গজঘন্টা ইউনিয়নের কিসামত হাবু গ্রামে ৫০ বছরের একটি পুরোনো রাস্তা।সেই রাস্তা দিয়ে এলাকার ৯ পরিবারের লোকজন প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে। একমাত্র রাস্তাটিই তাদের বিভিন্ন যানবাহন ও কৃষিপণ্য আনা নেয়ার ভরসা।এই রাস্তাটি একেবারে সরু করে দিয়ে যাতায়াতের অনুপযোগী করে ফেলেছে এলাকার এফতারুল হক নেতৃত্বদল।
এ ব্যাপারে ভোক্তভোগী পরিবারের কয়েকজন জানান,৫০ বছরের পুরোনো রাস্তাটি এফতারুল হক ও তার সহযোগীরা বাঁশের খুঁটি দিয়ে সরু করে ফেলেছে। এতে করে ৯ পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হওয়া উপক্রম।এই রাস্তা দিয়ে কোন প্রকার যানবাহন চলাচল করতে পারবেনা এখন।তারা রাস্তাটি আগের মতো প্রশস্তকরণ চেয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন দিলেও নেতৃত্বদলটি প্রসাশনের কোন তোয়াক্কা করছেনা।অপর দিকে ওই ৯ পরিবারে মধ্যে একটি পরিবার বেশি বেকায়দায় রয়েছে,তিনি হলেন,ড.ঈসা মোহাম্মদ। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ব বিদ্যালয় শিক্ষকতা পেশায় থাকায় শক্তভাবে আইনী লড়াইও করতে পারছেনা কারো বিরুদ্ধে।এখন নিরুপায় শিক্ষক পরিবারটি।
ঘটনায় গজঘন্টা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিয়ার রহমান কে তার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান,পুরোনা রাস্তাটি নিয়ে এলাকায় অনেক দেনদরবার হলেও এর কোন সুরাহা দেয়া যাচ্ছেনা।এখন ওই রাস্তার বিষয়ে তারা দুই পক্ষরাই বুঝে নিবে,আমাদের আর মাথা ব্যাথা নেই।
এ ব্যাপারে গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)’র সঙ্গে তারা মুঠে ফোনে চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি,বিধায় বক্তব্য নেয়া সম্বভ হয়নি।এলাকাবাসী সুত্র জানায়,উপজেলার গজঘন্টা ঘন্টা ইউনিয়নের কিসামত হাবু গ্রামটি ছিল শান্তিপূর্ণ।বিগত আওয়ামী স্বৈরাচারের আমলে এটি ধীরে ধীরে অশান্ত হয়ে ওঠে।এফতারুল হক নেতুত্বদল এই গ্রামের ‘ইন্দ্রারপাড় ক্লাবকে’ আস্তানা বানিয়ে এখানে চলায় নানা অপকর্ম। স্থানীয় আওয়ামী নামধারী সন্ত্রাসীরা এখানে সকল অপকর্মের পরিকল্পনা করে আসতো।স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ লেয়াকত হোসেন ও অন্যান্য আওয়ামী নেতারাও মিটিংয়ে উপস্থিত থেকে রসদ যোগাতো এখানে। চেয়ারম্যান লেয়াকত হোসেনের বাল্যবন্ধু হওয়ার সুবাদে এফতারুল হক হয়ে ওঠেন সন্ত্রাসীদের একজন। এফতারুল হক এলাকার নুরল হকের পুত্র।
জানাগেছে,নেতৃত্বদলটি এলাকার ইসলামী আলোচক মাওলানা শাহিদুল ইসলাম-কে বাড়ি থেকে তুলে এনে ক্লাবে শারীরিক নির্যাতন করে। এসময় তাকে অশ্লীল, অকথ্য ও অস্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং তাদের কথামত না চললে চিরতরে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া সহ এক পর্যায়ে মাওলানা শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে লিখিত মুসলেকা নেয় যে,তাঁদের যে কোনো নির্দেশ বিনাবাক্যে মেনে নিতে বাধ্য থাকবেন।
এই সন্ত্রাসীরা আলেম-ওলামাদের নিয়ে সারাক্ষণ কটুক্তি ও সামনা সামনি অপমান করার নেশায় মত্ত থাকে। এছাড়া মদ, গাঁজা, ফেন্সিডিল, ইয়াবাসহ নানান নেশাজাতীয় দ্রব্য অবাধে সরবরাহ করে যুব সমাজ -কে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে তারা।
চিহ্নত সন্ত্রাসীরা সরকারী রাস্তা পাকাকরণের কাজ আটকিয়ে টাকা আদায় করে। টাকা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেয়।কারো সাথে কথার কম বেশি হলে সাথে থাকা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বের করে হুমকি দেয় তারা।
এই এফতারুল হক ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন কৌশলে চাঁদাবাজি,সম্পত্তি জবরদখলের নেশায় বিভোর থাকত। সরকার বিরোধী মামলার ভয় দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়সহ প্রকাশ্য দিবালোকে জনসম্মুখে মামলার ভয় দেখিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করে রাখত তারা।
মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করে টাকা চাইত নেতৃত্ব দলটি। টাকা না দেওয়ায় আজও সে পথ বন্ধ করে রেখেছে দলটি
নেতৃত্বদলটির প্রধান সহযোগী হলো এলাকার আহসানুল হক।তাদের কাজই হলো মূলত সন্ত্রাসী কায়দায় মানুষকে ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে জায়গা জমি ভোগদখল করা,চাঁদাবাজি,হত্যার হুমকিসহ নানা অসৎ পরিকল্পনা করা।
অভিযুক্ত এফতারুল হকের স্ত্রী মায়া বেগম বলেন, ৫০ বছরের পুরোনো রাস্তার জমিটুকু আমাদের ব্যাক্তিগত সম্পত্তি,এক বছর আগেও রাস্তাটি বড়ছিল,এই রাস্তা দিয়ে গরুর গাড়ি যেত।এখন ড.ঈসা মোহাম্মদ সুযোগে রাস্তাটি সরকারি রেকর্ডে নিতে চান। আমরা তা হতে দেবনা।ওনি ড.ঈসা মোহাম্মদ আমাদের শরীকিয় লোক হয়েও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে।